দিরাই প্রতিনিধি::
দিরাই উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নের বাংলা বাজার সংলগ্ন সুনামপুর মৌজা দাগ নং ৪৬ খতিয়ান ১ এ ২২ একর ৯১ শতক জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের দুই নেতার দখলে ছিল। এই জায়গা নিয়ে গত দুই বছর যাবত ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষের মধ্যে হামলা মামলা হয়ে আসছিল।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নের সুনাম পুর মৌজা সরকারের খাস জমি রয়েছে ২২ একর ৯১ শতক। এই জায়গা দখল করে বহুমুখী সমবায় সমিতির ৫ শত সদস্য মাটি ভরাট করে ঘর নির্মাণ ও সীমানা ওয়াল নির্মাণ করে। অপর দিকে বাংলা বাজার মাছের আড়ত সম্প্রসারণের অজুহাতে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও সরকারি জায়গায় মাটি ফেলে সীমানা ওয়াল নির্মাণ করেন। এই নিয়ে ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। যা নিয়ে যেকোন সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিচ্ছিল এলাকাবাসী।
জানা যায় সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রফিনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর চৌধুরী বহুমুখী সমবায় সমিতির ব্যানারে সুনাম পুর মৌজার সরকারের খাস জমি দখল করে সমিতির উন্নয়নে ঘর নির্মাণের জন্য মাটি ভরাট করে সীমানা ওয়াল নির্মাণ করেন। এতে এলাকা জুড়ে মানুষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, রফিনগর ইউনিয়নের বাংলা বাজার সংলগ্ন খালি জায়গায় বহুমুখী সমবায় সমিতির সদস্যরা মাটি ভরাট করে ঘর নির্মাণ করে তারা দখল নিলে রফিনগর, মির্জাপুর, মাছিমপুর ও আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষের নজরে আসলে তাঁরা সবাই দফায় দফায় বৈঠকে বসে এর প্রতিবাদ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
এ নিয়ে জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যান ও রেজুয়ান চেয়ারম্যানের লোকজনের মধ্যে বাজারে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়। গত দুদিন আগে গভীররাতে বহুমুখী সমবায় সমিতির সদস্যরা ঘর নির্মাণ করে জায়গা দখল করলে সকালে দিরাই উপজেলা ভুমি কর্মকতা, রাজানগর ভুমি অফিসের তহশিলদার সহ দিরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন এবং ভুমি কর্মকতা ও তহশিলদার সরকারি জমি সীমানা নির্ধারণ করে লাল নিশানা ও সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। সাথে সাথে দুই আওয়ামী লীগ নেতার দখলকৃত সরকারি জমি উদ্ধারে অবৈধ স্থাপনা ভাঙার কাজ শুরু করেন। অবৈধ স্থাপনা ঘর নির্মাণের মালামাল ইউপি চেয়ারম্যান শৈলেন্দ্র কুমার দাসের জিম্মায় রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজুয়ান খান বলেন, এ সম্পত্তি আমার একুয়ার করা। কিছু জায়গা নিয়ে হাইকোর্ট এ মামলা চলছে। আমি দখল করিনি এটা আমার নিজের জায়গা।
জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেন, আমি নিজের জায়গায় মাটি ভরাট করেছি। দিরাই উপজেলা ভুমি কর্মকতা, রাজানগর ভুমি অফিসের তহশিলদার আমাদের না জানিয়ে আমার জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছেন যা দুঃখজনক। এ নিয়ে আমি আইনের আশ্রয় নেবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান বলেন, প্রভাবশালীরা সরকারি জায়গা দখল করেছিলেন, আমরা সরকারি বিধি অনুযায়ী জায়গা দখল মুক্ত করে সরকারের সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলের কারও অধিকার নেই ।