ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo শাল্লায় একাডেমিক ভবন প্রধান শিক্ষক ও তার ভাইয়ের দখলে Logo দিরাই বালিকা বিদ্যালয়ের মিলাদ মাহফিল Logo দিরাইয়ে অহিংস দিবস পালিত Logo আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস উপলক্ষে শান্তিগঞ্জে পিএফজি’র মানববন্ধন  Logo শান্তিগঞ্জে কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন Logo শান্তিগঞ্জে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়  Logo সুনামগঞ্জের জিল্লুর রহমান সহ ছয় অতিরিক্ত সচিবকে ওএসডি Logo দিরাইয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ব্যবহার করে কোন অনিয়ম দালালির সাথে জড়িতদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে Logo ল্যাব সংস্কারের টাকা আত্মসা শাল্লায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তুলে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোব! Logo শান্তিগঞ্জে জামায়াতের উদ্যোগে সিরাত মাহফিল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

সাত খুন: ৩ বছরে রায় হলেও ঝুলে আছে আপিলে

নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুনের ঘটনার ৯ বছর অতিবাহিত হয়েছে। ২০১৪ সালের এই দিনে (২৭ এপ্রিল) সাত জনকে অপহরণ করে খুন করা হয়। পরে একে এক তাদের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে। এই ঘটনায় নিম্ন আদালতে ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডসহ ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। পরে উচ্চ আদালতে ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখে অন্যান্য আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।তবে দীর্ঘ সাড়ে চার বছর ধরে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে মামলাটি শুনানির অপেক্ষায় আটকে আছে। এতে শঙ্কার মধ্যে রয়েছে নিহতের স্বজনরা। তারা সাজার রায় বহাল রেখে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করার দাবি জানিয়েছেন।জানা গেছে, সাত খুনের মামলায় ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১’র চাকরিচ্যুত সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজার আদেশ দেন।পরে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। ২০১৮ সালে ২২ আগস্ট ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখে অন্যান্য আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। বর্তমানে মামলাটি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে সাড়ে চার বছর ধরে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্টের দেওয়া রায় সন্তোষজনক হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা। তবে আপিল বিভাগেও এ রায় বহাল থাকবে বলে প্রত্যাশা করছেন। সেই সঙ্গে সাজার রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে এই ঘটনায় নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, ‘আসামিরা খুব প্রভাবশালী। তারা জেলে অবস্থান করলেও এলাকায় এখনও তাদের প্রভাব রয়ে গেছে। এদিকে আপিল বিভাগে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার ফলে নিহতদের পরিবার সদস্যদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।’শঙ্কা প্রকাশ করে নিহত মনিরুজ্জামান স্বপনের ছোট ভাই মিজানুর রহমান রিপন বলেন, ‘আজকে এই হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর অতিবাহিত হয়েছে, কিন্তু রায় কার্যকর হয়নি। তাহলে আমাদের শঙ্কা থেকেই যায়। প্রকৃতপক্ষে আসামিরা কী তাহলে ছাড় পেয়ে যাচ্ছে? এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের ঘটনার রায় দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।’বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নিম্ন আদালতে এই মামলার রায় দ্রুত হয়েছে। নিম্ন আদালতে সাজার বিরুদ্ধে আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করলে, হাইকোর্ট আপিলটি দ্রুত নিষ্পত্তি করেন। তবে আপিল বিভাগে মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে, মামলাটি উপস্থাপন করা হয়নি। আসামিপক্ষের লোকজন চেষ্টা করছেন মামলার রায় যেন দ্রুত সম্পন্ন না হয়। তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়েছে। আমরা চাই, রায় বহাল রেখে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা হোক ও এই মামলার রায় কার্যকর করা হোক।’নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক পিপি এস এম ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, ‘মামলাটি হাইকোর্টের আপিল ডিভিশনে চলমান। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্য আপিলের রায় পাওয়া যাবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার একটি সুবিচার পাবে।’উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার সহযোগী মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন, মনিরুজ্জামান স্বপনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইব্রাহিমসহ সাত জন অপহরণের শিকার হন। এর তিনদিন পর ৩০ এপ্রিল নজরুল ইসলামসহ ছয় জন ও ১ মে সিরাজুল ইসলাম লিটনের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীর বন্দরের শান্তিরচর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় আলাদা দুটি মামলা করেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন

শাল্লায় একাডেমিক ভবন প্রধান শিক্ষক ও তার ভাইয়ের দখলে

সাত খুন: ৩ বছরে রায় হলেও ঝুলে আছে আপিলে

আপডেট সময় ১১:৩৭:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩

নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুনের ঘটনার ৯ বছর অতিবাহিত হয়েছে। ২০১৪ সালের এই দিনে (২৭ এপ্রিল) সাত জনকে অপহরণ করে খুন করা হয়। পরে একে এক তাদের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে। এই ঘটনায় নিম্ন আদালতে ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডসহ ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। পরে উচ্চ আদালতে ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখে অন্যান্য আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।তবে দীর্ঘ সাড়ে চার বছর ধরে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে মামলাটি শুনানির অপেক্ষায় আটকে আছে। এতে শঙ্কার মধ্যে রয়েছে নিহতের স্বজনরা। তারা সাজার রায় বহাল রেখে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করার দাবি জানিয়েছেন।জানা গেছে, সাত খুনের মামলায় ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১’র চাকরিচ্যুত সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজার আদেশ দেন।পরে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। ২০১৮ সালে ২২ আগস্ট ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখে অন্যান্য আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। বর্তমানে মামলাটি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে সাড়ে চার বছর ধরে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্টের দেওয়া রায় সন্তোষজনক হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা। তবে আপিল বিভাগেও এ রায় বহাল থাকবে বলে প্রত্যাশা করছেন। সেই সঙ্গে সাজার রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে এই ঘটনায় নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, ‘আসামিরা খুব প্রভাবশালী। তারা জেলে অবস্থান করলেও এলাকায় এখনও তাদের প্রভাব রয়ে গেছে। এদিকে আপিল বিভাগে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার ফলে নিহতদের পরিবার সদস্যদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।’শঙ্কা প্রকাশ করে নিহত মনিরুজ্জামান স্বপনের ছোট ভাই মিজানুর রহমান রিপন বলেন, ‘আজকে এই হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর অতিবাহিত হয়েছে, কিন্তু রায় কার্যকর হয়নি। তাহলে আমাদের শঙ্কা থেকেই যায়। প্রকৃতপক্ষে আসামিরা কী তাহলে ছাড় পেয়ে যাচ্ছে? এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের ঘটনার রায় দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।’বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নিম্ন আদালতে এই মামলার রায় দ্রুত হয়েছে। নিম্ন আদালতে সাজার বিরুদ্ধে আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করলে, হাইকোর্ট আপিলটি দ্রুত নিষ্পত্তি করেন। তবে আপিল বিভাগে মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে, মামলাটি উপস্থাপন করা হয়নি। আসামিপক্ষের লোকজন চেষ্টা করছেন মামলার রায় যেন দ্রুত সম্পন্ন না হয়। তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়েছে। আমরা চাই, রায় বহাল রেখে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা হোক ও এই মামলার রায় কার্যকর করা হোক।’নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক পিপি এস এম ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, ‘মামলাটি হাইকোর্টের আপিল ডিভিশনে চলমান। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্য আপিলের রায় পাওয়া যাবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার একটি সুবিচার পাবে।’উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার সহযোগী মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন, মনিরুজ্জামান স্বপনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইব্রাহিমসহ সাত জন অপহরণের শিকার হন। এর তিনদিন পর ৩০ এপ্রিল নজরুল ইসলামসহ ছয় জন ও ১ মে সিরাজুল ইসলাম লিটনের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীর বন্দরের শান্তিরচর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় আলাদা দুটি মামলা করেন।