শাল্লা প্রতিনিধি::-প্রশাসনের কাছ থেকে চাহিদা মত হাওর রক্ষা বাঁধের প্রকল্প (পিআইসি) না পাওয়ায় প্রশাসনের প্রতি ক্ষুব্ধ হওয়ার অভিযোগ উটেছে শাল্লা সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও অনিবন্ধিত সংগঠন হাওর বাঁচাও আন্দোলন শাল্লা শাখার সভাপতি তরুণ কান্ত দাশের বিরুদ্ধে। জানা যায় প্রকল্প অনুমোদনের পূর্বে প্রশাসনের কাছে ৫টি প্রকল্প (পিআইসি) চেয়েছিলেন এই অধ্যাপক। ৬ লক্ষ ৪২ হাজার টাকার একটি প্রকল্প তার আপন ভাই প্রেমবাঁশী দাশের নামে অনুমোদনও দিয়েছে কিন্তু এতেই সন্তোষ্ট নন অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস। একটি সূত্র জানায় প্রকল্প অনুমোদনের পর পরই প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানাধরণের ষড়যন্ত্র চালাতে থাকেন তিনি। অনিবন্ধিত সংগঠন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কিছু নামধারী ও কুচক্রীদের নিয়ে শাল্লা সরকারি ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক তরুন কান্তি দাসের নেতৃত্বে বে-আইনী ভাবে গতকাল ইউএনও অফিস ঘেরাও করা হয়।
একজন সরকারি শিক্ষক হয়ে এবং প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি পাঠদান কাজ চলমান সময়ে তিনি কি ভাবে একটি সরকারি অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন এ নিয়ে উপজেলা জুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। জানা যায়, গত ১৫মার্চ সুনমগঞ্জের একটি অনিবন্ধিত সংগঠন ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন’ চলতি বছরে পাউবো কর্তৃক হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ তরান্বিত করার লক্ষ্যে শাল্লা ইউএনও অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে।
আর ওই সংগঠনের শাল্লা উপজেলা শাখার সভাপতি হিসেবে শাল্লা সরকারি ডিগ্রি কলেজের সহযোগি অধ্যাপক তরুন কান্তি দাস উক্ত কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন। শুধ এখানেই শেষ নয়, সহযোগি অধ্যাপক তরুন কান্তি দাসের আপন ভাই প্রেমবাঁশী দাসের নামে ছায়ার হাওরে ১২৮নং পিআইসিটি ভাগিয়ে নেন তিনি। এছাড়াও অনুসন্ধানে জানা যায়,ওই সংগঠনের শাল্লা উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক জয়ন্ত সেনও পাউবো’র বাঁধ নির্মাণ কাজের প্রায় ৫ লক্ষ টাকার সাইনবোর্ড বিক্রয় কাজের সিন্ডিকেটে জড়িত রয়েছেন।
এবিষয়ে শাল্লার বিশিষ্ট সমাজ সেবক শাহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত হাজী সঞ্জব আলী’র ছেলে মোঃ আব্দুল মন্নানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, অধ্যাপক তরুন কান্তি দাস তো হলুদ। তিনি দেশের সকল সংগঠনের সভাপতি। এই উপজেলায় তো আর কোনো লোক নেই। তার কথা বলে শেষ করা যাবে না। তিনি কলেজ ফাঁকি দিয়ে কি ভাবে কি স্বার্থে, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাথে ইউএনও অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন, তা আমার বোধগম্য নয়। তিনি আরো বলেন, অধ্যাপক তরুন উপজেলাটাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। শাল্লা সরকারি ডিগ্রি করেজের অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস শহীদের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ কোনো আন্দোলন
কমিটির সাথে যুক্ত থাকার কোনো বিধান নেই। কলেজের শিক্ষক তরুন কান্তি দাস কর্তৃক শাল্লা ইউএনও অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সহযোগি অধ্যাপক তরুন কান্তি দাস সরকারী কর্মচারী, আইন মতে তিনি এ কাজ করতে পারেন না। এটা তিনি বে-আইনী করেছেন।
এব্যাপারে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু তালেবের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সরকারি কলেজে শ্রেণি পাঠদান কাজ চলাকালে শিক্ষক তরুন
কান্তি দাস একটি আন্দোলন কমিটির সাথে যুক্ত হয়ে আমার অফিস ঘেরাও করেছে। তবে এসময় আমি মাঠে ছিলাম। এবিষয়ে শাল্লা সরকারি ডিগ্রি কলেজের সহযোগি অধ্যাপক তরুন কান্তি দাসের
মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ যথাযথ ভাবে করার
জন্য ও এলাকাবাসির স্বার্থে আমাদের হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মসূচি হিসেবেই শাল্লা ইউএনও অফিস ঘেরাও করা হয়েছে। আপনি সরকারি কলেজের একজন শিক্ষক হয়ে কিভাবে এ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন জানতে চাইলে, তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। উপজেলার সচেতন বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা যায় সহযোগি অধ্যাপক তরুন
কান্তি দাস উদীচী, বাংলাদেশ পূঁজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খিষ্ট্রান ঐক্য পরিষদ, হাওর বাঁচাও আন্দোলন সহ বিভিন্ন কমিটির শাল্লা উপজেলা শাখার
সভাপতি পদে আসিন রয়েছে এবং ওইসব পদ-পদবি ব্যবহার করেই তিনি দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরণের অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছেন। শুধু তাই নয় এসব সংগঠনের নাম বিক্রি করে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন জনকে নানাধরণের ভয়ভীতি দেখানোরও অভিযোগ রয়েছে অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাশের বিরুদ্ধে।