ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo সুনামগঞ্জ জেলা জমিয়তের সহ-সভাপতি নিখোঁজ মাওলানা মোশতাক আহমদের সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন Logo সুনামগঞ্জে জমিয়ত নেতা মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরী নিখোঁজ Logo বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জগন্নাথপুরে আলোচনা সভা ও দলীয় কার্যালয় উদ্ভোধন Logo মধ্যনগরে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদের ফরম ক্রয়কে ঘিরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে Logo বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সুনামগঞ্জে বর্ণ্যাঢ্য র‍্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo শান্তিগঞ্জে মানসিক রোগীর লাশ উদ্ধার Logo শান্তিগঞ্জে জমিয়তের গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী বৈঠক অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুর জমিয়তের সভাপতি মাসরুর কাসেমীর সাথে হাম্মাদ গাজিনগরীর বৈঠক Logo শান্তিগঞ্জে ব্যতিক্রমধর্মী গণসংযোগে মাওলানা হাম্মাদ আহমদ গাজীনগরী Logo সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারে ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল-২০২৫

ছাতকে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ধীরগতি

  • পাপলু মিয়া
  • আপডেট সময় ০৬:৫৩:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৫৫৯ বার পড়া হয়েছে

ছাতক(সুনামগঞ্জ)প্রতি‌নি‌ধি
সুনামগঞ্জের ছাতকে ধীরগতিতে চলছে হাওরের বোরো ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ। এতে হাওর পাড়ের কৃষকরা দু:চিন্তায় রয়েছেন। ২৮ ফেরুয়ারির মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও মানা হচ্ছেন না নির্দেশনা। এ পর্যন্ত অধিকাংশ বাঁধের কাজ ৬০ ভাগ হয়নি।
জানা যায়, ছাতকে হাওরে বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের জন্য ২৮টি পিআইসি রয়েছে। বরাদ্দ হয়েছে ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। চলতি ২৮ ফেরুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে। ধীরগতিতে কাজ হওয়ায় এ পর্যন্ত অধিকাংশ বাঁধের কাজ ৬০ ভাগ হয়নি। বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে বাকী কাজ যথা সময়ের মধ্যে সম্পন্ন না হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। এতে অপূরণীয় ক্ষতিও হতে পারে। সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন হাওরের সফল রক্ষা বাঁধ ঘুরে এবং কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, সরকার কৃষকদের বোরো ফসল রক্ষায় বেড়িবাঁধ নির্মাণে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে থাকে। এ বরাদ্দকৃত অর্থ অনুযায়ী সময় মতো টেকসই কাজ করা হলে একমাত্র প্রাকৃতিক দূর্যোগ ছাড়া ফসলের ক্ষতির কারণ নেই। এখানে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ পেতে এবং পিআইসির কমিটিতে থাকতে প্রথমে অনেকেই জোর লভিং শুরু করেন। কাজ পাওয়ার পর সেই আগ্রহ থেমে যায়। চলে ইচ্ছামতো নিজের খেয়াল খুশিতে বাঁধের কাজ। বরাদ্দের ২৩ ভাগ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এখানেও এমনটাই হচ্ছে। কম টাকার প্রকল্প বেশি টাকায় ধরা হয়েছে। তার পরও বাঁধের কাজে চলছে ধীরগতি। কাজের পাশে অধিকাংশ প্রকল্পের নেই কোন সাইনবোর্ড। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠনে মাঠ পর্যায়ে ঘুস লেনদেনের একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, উপজেলার চরমহল্লা ইউনিয়নের চানপুরের ৭ নং পিআইসিতে ৬০৫ মিটার কাজে ৬ লাখ ৮৮হাজার ১শত ১৩ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বুকী নদীর পাড়ের বাঁধে কাজ হয়েছে মাত্র ২০-২৫ ভাগ। বাঁধে পর্যাপ্ত মাটি দেওয়া হয়নি। রাস্তা কুড়ে মাটির লেপন দিয়ে কাজ সমাপ্ত করার চেষ্টায় পিআইসি কমিটি সদস্যরা। এমনটাই বক্তব্য দিয়েছেন স্থানীয় অনেকেই। বাঁধ নির্মাণে ট্রাক্টর যাতায়াতের নামে বাঁধের পাশের এক গরিবের ১০টি গাছ কেটে প্রায় ৩০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। এ পিআইসি কমিটির সদস্য সচিব মোশাররফ হোসেন নামের ব্যক্তি এক কলেজের এক প্রভাষককে দেখানো হয়েছে কৃষক। এ বাঁধ নির্মাণে ইউনিয়নের মধ্যে সব চেয়ে বেশি অনিয়ম-দূর্ণীতির আশঙ্কা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থানীয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি অর্থ বরাদ্দের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া উপজেলার জাউয়াবাজার, দক্ষিন খুরমা, উত্তর খুরমা, নোয়ারাইসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধিক ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম হচ্ছে। টেকসই বাঁধ নির্মাণ হচ্ছেনা। ধীরগতিতে চলছে কাজ। জাউয়াবাজার, চরমহল্লা ইউনিয়নের একাধিক কৃষকরা জানান, পিআইসি যেভাবে ধীরগতিতে কাজ চলছে তাতে প্রতিবছরের মতো এবারও লুটপাটের শঙ্কাও রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেটের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন এসও বা মাঠ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক ভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এখানের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা এসওর তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত ৭০ ভাগ কাজ হয়েছে।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে কোন ধরনের অনিয়ম-দূর্ণীতি বা গাফিলতি সহ্য করা হবেনা। প্রমাণ পেলে যত বড় প্রভাবশালীই হোক তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। এর পরও যদি কেউ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে সেই দায়িত্ব তার নিজের। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি প্রকল্পের পাশে অবশ্যই সাইনবোর্ড থাকতে হবে। সাইনবোর্ড দেখে যে কেউ কাজের বিষয় ও বরাদ্দের পরিমান জানতে পারে এবং অনিয়ম হলে প্রতিবাদ করতে পারে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন

সুনামগঞ্জ জেলা জমিয়তের সহ-সভাপতি নিখোঁজ মাওলানা মোশতাক আহমদের সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন

ছাতকে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ধীরগতি

আপডেট সময় ০৬:৫৩:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ছাতক(সুনামগঞ্জ)প্রতি‌নি‌ধি
সুনামগঞ্জের ছাতকে ধীরগতিতে চলছে হাওরের বোরো ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ। এতে হাওর পাড়ের কৃষকরা দু:চিন্তায় রয়েছেন। ২৮ ফেরুয়ারির মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও মানা হচ্ছেন না নির্দেশনা। এ পর্যন্ত অধিকাংশ বাঁধের কাজ ৬০ ভাগ হয়নি।
জানা যায়, ছাতকে হাওরে বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের জন্য ২৮টি পিআইসি রয়েছে। বরাদ্দ হয়েছে ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। চলতি ২৮ ফেরুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে। ধীরগতিতে কাজ হওয়ায় এ পর্যন্ত অধিকাংশ বাঁধের কাজ ৬০ ভাগ হয়নি। বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে বাকী কাজ যথা সময়ের মধ্যে সম্পন্ন না হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। এতে অপূরণীয় ক্ষতিও হতে পারে। সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন হাওরের সফল রক্ষা বাঁধ ঘুরে এবং কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, সরকার কৃষকদের বোরো ফসল রক্ষায় বেড়িবাঁধ নির্মাণে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে থাকে। এ বরাদ্দকৃত অর্থ অনুযায়ী সময় মতো টেকসই কাজ করা হলে একমাত্র প্রাকৃতিক দূর্যোগ ছাড়া ফসলের ক্ষতির কারণ নেই। এখানে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ পেতে এবং পিআইসির কমিটিতে থাকতে প্রথমে অনেকেই জোর লভিং শুরু করেন। কাজ পাওয়ার পর সেই আগ্রহ থেমে যায়। চলে ইচ্ছামতো নিজের খেয়াল খুশিতে বাঁধের কাজ। বরাদ্দের ২৩ ভাগ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এখানেও এমনটাই হচ্ছে। কম টাকার প্রকল্প বেশি টাকায় ধরা হয়েছে। তার পরও বাঁধের কাজে চলছে ধীরগতি। কাজের পাশে অধিকাংশ প্রকল্পের নেই কোন সাইনবোর্ড। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠনে মাঠ পর্যায়ে ঘুস লেনদেনের একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, উপজেলার চরমহল্লা ইউনিয়নের চানপুরের ৭ নং পিআইসিতে ৬০৫ মিটার কাজে ৬ লাখ ৮৮হাজার ১শত ১৩ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বুকী নদীর পাড়ের বাঁধে কাজ হয়েছে মাত্র ২০-২৫ ভাগ। বাঁধে পর্যাপ্ত মাটি দেওয়া হয়নি। রাস্তা কুড়ে মাটির লেপন দিয়ে কাজ সমাপ্ত করার চেষ্টায় পিআইসি কমিটি সদস্যরা। এমনটাই বক্তব্য দিয়েছেন স্থানীয় অনেকেই। বাঁধ নির্মাণে ট্রাক্টর যাতায়াতের নামে বাঁধের পাশের এক গরিবের ১০টি গাছ কেটে প্রায় ৩০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। এ পিআইসি কমিটির সদস্য সচিব মোশাররফ হোসেন নামের ব্যক্তি এক কলেজের এক প্রভাষককে দেখানো হয়েছে কৃষক। এ বাঁধ নির্মাণে ইউনিয়নের মধ্যে সব চেয়ে বেশি অনিয়ম-দূর্ণীতির আশঙ্কা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থানীয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি অর্থ বরাদ্দের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া উপজেলার জাউয়াবাজার, দক্ষিন খুরমা, উত্তর খুরমা, নোয়ারাইসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধিক ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম হচ্ছে। টেকসই বাঁধ নির্মাণ হচ্ছেনা। ধীরগতিতে চলছে কাজ। জাউয়াবাজার, চরমহল্লা ইউনিয়নের একাধিক কৃষকরা জানান, পিআইসি যেভাবে ধীরগতিতে কাজ চলছে তাতে প্রতিবছরের মতো এবারও লুটপাটের শঙ্কাও রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেটের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন এসও বা মাঠ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক ভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এখানের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা এসওর তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত ৭০ ভাগ কাজ হয়েছে।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে কোন ধরনের অনিয়ম-দূর্ণীতি বা গাফিলতি সহ্য করা হবেনা। প্রমাণ পেলে যত বড় প্রভাবশালীই হোক তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। এর পরও যদি কেউ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে সেই দায়িত্ব তার নিজের। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি প্রকল্পের পাশে অবশ্যই সাইনবোর্ড থাকতে হবে। সাইনবোর্ড দেখে যে কেউ কাজের বিষয় ও বরাদ্দের পরিমান জানতে পারে এবং অনিয়ম হলে প্রতিবাদ করতে পারে।